Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ বুধবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিয়ের দাবিতে অনশন করতে করতে পারভীনের আত্মহত্যা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২১, ০১:০৭ PM
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১, ০১:০৭ PM

bdmorning Image Preview


গ্যাস ট্যাবলেট হাতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে উঠেছিলেন পারভীন আক্তার নামে এক নারী। কিন্তু প্রেমিক নাজির হোসেন ওই নারীকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানান। এমনকি প্রেমের সম্পর্কও অস্বীকার করেন প্রতারক প্রেমিক। এতে অভিমানে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন ওই নারী। ঘটনাটি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের।

বুধবার (০৭ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা জানান, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের শাহ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তার। প্রায় এক যুগ আগে পার্শ্ববর্তী মামুরশাহী নতুনপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সংসারজীবনে তাঁদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিগত ছয় বছর আগে স্বামী সাইফুল ইসলাম মারা যান। এরপর বাবার বাড়িতে চলে আসেন পারভীন।

পরবর্তী সময়ে সাধুবাড়ী পাকারমাথা নামক স্থানে সিট কাপড় বিক্রির দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন পারভীন আক্তার। এরই মধ্যে খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে নাজির হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেমিক নাজির তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হলে নানা ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন প্রেমিক নাজির।

তাই গ্যাস ট্যাবলেট হাতে নিয়ে মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ের দাবিতে প্রেমিক নাজিরের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেন। এ সময় গ্রাম্য মাতুব্বর ও উভয় পরিবারের লোকজন মিলে সমঝোতার চেষ্টা চালান। কিন্তু প্রেমিক নাজির তাকে বিয়ে করতে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেন। এমনকি প্রেমের সম্পর্কই অস্বীকার করেন তিনি। এতে অভিমান করে ওই দিন সন্ধ্যায় পাশেই চাচার বাড়িতে গিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পারভীন আক্তার। একপর্যায়ে তাঁর স্বজন ও স্থানীয়রা ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রুত উদ্ধার করে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তবে বগুড়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান পারভীন আক্তার।

এদিকে ঘটনাটি থানা পুলিশকে না জানিয়েই নিহতের লাশটি খন্দকারটোলাস্থ চাচা জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে এনে তড়িঘড়ি করে রাতেই গোপনে মাটি দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। এরই মধ্যে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত নাজির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকায় এবং ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেই সঙ্গে পারভীন আক্তারের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview