নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার মদনপুরের কাজীপাড়ার জঙ্গি ডেরায় পুলিশের দ্বিতীয় অভিযানেও বোমা তৈরির সরঞ্জাম, রিমোট কট্রোলসহ আরও কিছু সামগ্রী উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে জঙ্গি ডেরায় অভিযান সমাপ্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
রোববার (১১ জুলাই) দিনগত ১২টার দিকে নোয়াগাঁও এলাকার জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ির অভিযান সমাপ্ত করে তিনি এ তথ্য জানান।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, আমরা এখানে অভিযান পরিচালনাকালে, জঙ্গিদের পক্ষ থেকে একটি হুমকি এসেছে এবং তারা পোস্ট দিয়েছেন। তারা সেকেন্ডারি অ্যাটাকের পরিকল্পনা করেছেন। আমরা সবাই সতর্ক থাকব। এ কাণ্ডের আগে গত ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর থেকে একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে রবিবার বিকেলে আড়াইহাজারের মিয়াবাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে বোমাটি আড়াইহাজারের বাড়িতে তৈরি করা হয়েছিল। সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মামুন জঙ্গি গ্রুপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সে জঙ্গিগোষ্ঠীর সামরিক সদস্য।
তাদের এমন সামরিক সদস্যের সংখ্যা খুবই লিমিটেড হয়। তারা সাধারণত কোনো হামলা সংগঠিত করতে পরিকল্পনা করে থাকেন। বোমাগুলো খুব শক্তিশালী উল্লৈখ করে তিনি বলেন, বিষ্ফোরিত দুটি বোমার শব্দে পুরো এলাকা কম্পিত হয়। আরেকটি একটু কম শক্তিশালী। এসব বোমা এ কারখানার মামুন নিজেই তৈরি করত।
মামুনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নামে সিটিটিসি। এ সময় সেখানে পরপর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথমটি রাত ১০টা ১০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি রাত ১০টা ৫৪ মিনিটে এবং সর্বশেষটি ১১টা ৮ মিনিটে বিষ্ফোরণ ঘটে। প্রতিটি বিস্ফোরণের শব্দ ছিল বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা।
রবিবার রাত ২টা ৫০ মিনিটে অভিযান শুরু করে ৩টা ৩০ মিনিটে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। অভিযান শেষে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের একটি টিম তিনদিন পূর্বে বামসি বারেক ওরফে সাব্বিরসহ তিন জঙ্গিকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে।
বারেকের তথ্য মোতাবেক আমাদের একটি টিম রবিবার সন্ধ্যার দিকে কেরানীগঞ্জ থেকে মেজর ওসামা ওরফে নাইমকে গ্রেফতার করে। নাইম জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে নব্য জেএমবির সদস্য। মসজিদে ইমামতি করে। যে বাসা থেকে বোমার তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি সেই বাসায় সে সপরিবারে থাকত।
কয়েকদিন আগে তিনি তার পরিবারকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে বোমা তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে একা একা বোমা তৈরি করছিল।এখান থেকে আমরা শক্তিশালী আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বোমা তৈরির সামগ্রী পেয়েছি। নাঈম নব্য জেএমবির সামরিক সদস্য এবং বোমা তৈরির প্রশিক্ষক।
এর আগে গত ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর থেকে একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে রোববার বিকেলে আড়াইহাজারের মিয়াবাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে বোমাটি আড়াইহাজারের বাড়িতে তৈরি ছিল।
সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মামুন জঙ্গি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। তিনি জঙ্গিগোষ্ঠীর সামরিক সদস্য। তাদের এমন সামরিক সদস্যের সংখ্যা খুবই লিমিটেড হয়। তারা সাধারণত কোনো হামলা সংগঠিত করতে পরিকল্পনা করে থাকেন।
বোমাগুলোখুব শক্তিশালী উল্লৈখ করে তিনি বলেন, দুটি বোমার শব্দে পুরো এলাকা কম্পিত হয়। আরেকটি একটু কম শক্তিশালী। এসব বোমা এ কারখানার মামুন নিজেই তৈরি করতেন।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, বন্দর থানার মদনপুরের কাজীপাড়া এলাকার আরেকটি বাড়িতেও মামুনের যাতায়াত ছিল। সেখানে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি চলছে।