ঈদের দিন ব্যস্ততার কারণে যারা কোরবানি দিতে পারেননি তারাই দ্বিতীয় দিন পশু কোরবানি করছেন। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে। এছাড়াও ঈদের দিন কসাইয়ের সংকটের জন্য দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দিচ্ছেন বলে জানান ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।
বেশিরভাগ মানুষকে রাজধানীতে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানের বাইরেই কোরবানি দিতে দেখা গেছে।
ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, বাড্ডা, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি করতে দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নাঈম হোসেন ব্যস্ততা ও আশানুরূপ দামে পশু কিনতে না পারায় ঈদের দিন পশু কোরবানি করতে পারেননি। ঈদের দিন দুপুরে রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট থেকে নিজের সাধ্যের মধ্যে একটা গরু কেনেন তিনি।
নাঈম বলেন, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আমি আমার বাজেটের মধ্যে কোনো গরু পাচ্ছিলাম না, তাই ঈদের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। ঈদের দিন দুপুরে একটা গরু কিনি, সেটা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে কোরবানি করলাম।
সাইফুল্লাহ নামের একজন বলেন, আজ কোরবানি দিতে কোনো বাধা নেই। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আজ এবং আগামীকালও কোরবানি দেয়া যাবে। গতকাল কসাই খুঁজে পাইনি। তাছাড়া এদের দিন কোরবানি দিলে নানা ঝামেলা হয়। সবকিছু মিলে আজ কোরবানি দিচ্ছি। কোনো ঝামেলা নেই, কসাই পেতে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, কোরবানি দেয়া হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কোরবানির নিয়ত করে আগেই গরু কিনে এনেছি। এখন আল্লাহর নামে কোরবানি দিলাম। কবুল করার মালিক আল্লাহ।
রামপুরায় আজ কোরবানি দেয়া আরেক মুসল্লি শামসুল খান বলেন, গতকাল বিকেলে আমার ছোট ভাই কোরবানি দিয়েছে। ওখানে আমরা সবাই ছিলাম। ভেবেছিলাম ওদেরটা শেষ করে আমাদের গরুটা কোরবানি দেব। কিন্তু সময় কুলিয়ে উঠতে পারিনি। তাই আজ সকালে গরু কোরবানি দিলাম।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় ঈদের দিন কোরবানি দেই। এবার ওই ঈদের পরের দিন কোরবানি দিচ্ছি। গতকালের তুলনায় আজ ঝামেলা কমে মনে হচ্ছে। এখন ভালোভাবে বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার চেষ্টা করছি।
এছাড়া পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় দ্বিতীয় দিন পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে। বংশাল, ওয়ারী, টিকাটলী, চকবাজার, বাবুবাজার, বকশীবাজার, নাজিরা বাজার, রায়সাহেব বাজার এলাকায় রবিবার সকালে কোরবানির পশু জবাই করছেন অনেকেই।
বুধবার সারা দেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন রাজধানীসহ সারা দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা পশু কোরবানি করে ধর্মীয় এই উৎসবটি উদযাপন করেন। তবে ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা যাবে। সে অনুযায়ি বৃহস্পতিবার ছাড়াও ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন অর্থ্যাৎ শুক্রবারও (২৩ জুলাই) কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু জবাই করা যাবে।