Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শনিবার, মে ২০২৫ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘সবচেয়ে কঠোর’ লকডাউনে সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কে হাজার হাজার মানুষের ভিড়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২১, ১১:৩৫ AM
আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১, ১১:৪৭ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


‘সবচেয়ে কঠোর’ লকডাউনে সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। সড়কে যানবাহন না থাকায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় লঞ্চ থেকে নেমে থেকে হেঁটে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হন তারা। শিশুসন্তান, নারী, বয়স্কদের নিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে বাসার দিকে যান অনেকে। কেউ আবার অ্যাম্বুলেন্সে করে, ভ্যান, পিকভ্যানে রওনা হন গন্তব্যে।

ঈদের ছুটি শেষে শুরু হওয়া লকডাউনে সকাল ৬টা থেকে বন্ধ বাসসহ বড় ধরনের গণপরিবহন। রিকশা চলাচলও কম। এতে আগের রাতে রওনা হয়ে সকালে রাজধানীতে পৌঁছানো লোকজন পড়েছেন বিপাকে। গাড়ি না পেয়ে মাথায়, হাতে ব্যাগ নিয়ে বাসায় ফিরতে হচ্ছে তাদের।

ঈদের ছুটি শেষে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার থেকেই দেশজুড়ে আবার দুই সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে। মানুষের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে এবারের বিধিনিষেধ ‘সবচেয়ে কঠোর’ হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি জানান, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত চলমান থাকবে এই কঠোর অবস্থা। এ বিষয়ে ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।

‘সবচেয়ে কঠোর’ লকডাউনের প্রথম দিনে সদরঘাট থেকে গুলিস্তান সড়কে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়।

দুর্ভোগ চরমে

ভোলা থেকে লঞ্চে করে সকালে সদরঘাট নামেন আমজাদ আলী। শিশুসহ পরিবার নিয়ে যাবেন গাজীপুর। সন্তান কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করেন তিনি।

আমজাদ জানান, সকালে সদরঘাট পৌঁছেছেন। ঢাকা এসে খুব বিপদে পড়েছেন। বাসা গাজীপুর। গাড়ি পাচ্ছেন না। তাই হেঁটেই গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

ঢাকায় ফিরে গাড়ি না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাদের একজন ফারুক হোসেন বলেন, ‘সদরঘাট থেকে এসেছি। আমার বাড়ি ভোলা। আমার কথা হচ্ছে দেশের প্রয়োজনে লকডাউন দিচ্ছে সরকার। নিশ্চয়ই এটা আমাদের ভালোর জন্য। আসলে সিস্টেমটা হওয়া উচিত ছিল পজিটিভলি।

‘আমার অফিস খোলা। কোম্পানি আমাকে ছুটি দিচ্ছে না। চাকরি চলে যাবে আমি যদি ঢাকায় না আসি। আমাকে তো অফিসে আসতেই হবে। যদি সাধারণ সিটি থেকে সবকিছু বন্ধ করে দিত তাহলে আমরা আসতে পারতাম না।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপিরা তো আরামে আছেন। আমরা যারা খেটে খাওয়া মানুষ, আমরা আছি বিপাকে। আমরা তো কেউ ঢাকায় পিকনিক করতে আসি নাই। যা করবে একটা নিয়মের মধ্যে রেখে করা উচিত।’

রিকশায় বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ

রাজধানীতে সকাল থেকে রিকশা চলতে দেখা যায়। অনেকে দাবি করেছেন, রিকশা ভাড়া বেশি নিচ্ছেন চালকরা।

রামিজ উদ্দিন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। অফিস ফার্মগেট। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ফার্মগেট রিকশা ভাড়া সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কিন্তু ভাড়া চাচ্ছেন দেড় শ টাকা।

‘গণপরিবহন না থাকার কারণে তারা তাদের মনমতো ভাড়া চাচ্ছেন। কারণ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি। সেটা তারা বুঝে গেছেন।’

চেকপোস্ট তুলনামূলক কম

ঈদের আগে শাটডাউন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কঠোর লকডাউনে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে পুলিশের চেকপোস্ট। তবে ঈদ পরবর্তী লকডাউনের প্রথম দিনে তেমন দৃশ্য চোখে পড়েনি।

যেসব জায়গায় চেকপোস্ট রয়েছে, সেগুলোতে গাড়িগুলো চেক করা হচ্ছে। তবে সাজা ও জরিমানা করতে দেখা যায়নি।

রাজধানীর গুলিস্তান ফ্লাইওভারের নিচে চেকপোস্টের ট্রাফিক সার্জেন্ট আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আমরা সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। লকডাউন বাস্তবায়নে যে সকল স্টেপ নেয়া দরকার, সেই স্টেপ অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।

‘প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা আছে, আজ সকাল ৬টা থেকে লকডাউন বাস্তবায়ন হবে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যানবাহন বন্ধ আছে। যার যার ব্যক্তিগত উপায়েই যেতে হবে। এ ছাড়া কোনো ওয়ে নাই।’

Bootstrap Image Preview