Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

পরীমনির বিরুদ্ধে 'মাত্র' একটি মামলা করছে র‌্যাব

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০২১, ০৫:০০ PM
আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২১, ০৫:০০ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


মাদক আইনে পরীমনি ও তার বাসা থেকে আটক আশরাফুল ইসলাম দীপুর বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। আর পরিচালক নজরুল ইসলাম রাজ এবং তার অফিস থেকে আটক সবুজ আলীর বিরুদ্ধে আর মামলা হচ্ছে মাদক ও পর্ণোগ্রাফি আইনে।

দুটি মামলায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

বুধবার রাতে র‌্যাব অভিযান শেষে পরীমনিকে আটক করে। আটকের পর তাকে র‍্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর সেখানেই রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরীমনিকে। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বুধবার বিকালে অভিযানের সময় পরীমণির বাসায় প্রবেশ করা নিয়েই অনেক জটিলতা তৈরি হয়। তিনি ভেতর থেকে বাসার দরজা খুলছিলেন না। প্রায় আধঘণ্টা পর দরজা খুলে দিলে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল তার বাসায় প্রবেশ করে। পরীমণি প্রথমে র‌্যাবের গোয়েন্দা দলের কাছে উচ্চ পর্যায়ে তার অনেক যোগাযোগের কথা বলেন। পরে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, আইস ও এলএসডি মাদক উদ্ধারের পর চুপসে যান তিনি। এরপর আভিযানিক দলের সদস্যদের সহযোগিতা করেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আটকের পর পরীমণিকে সোজা উত্তরার র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তাকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পরীমণি কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তার সঙ্গে উচ্চবিত্ত ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কার কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে- তা অকপটে বলতে শুরু করেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কর্মকর্তারা তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন, বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস এবং কিছুদিন আগে বোট ক্লাবে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের অভিযোগ সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। কোনও কোনও প্রশ্নের জবাবে নিশ্চুপ ছিলেন পরী। তবে বেশিরভাগ সময়ই কান্নাকাটি করেছেন। পরী বলেছেন, তিনি ভাবতেও পারেননি তার বাসায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালাতে পারে কিংবা তাকে এভাবে মাদকদ্রব্যসহ আটক করা হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযানের সময় পরীমণি জনৈক সম্পদ (ব্যক্তির নাম) ও পুলিশের একজন কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। তাদের সঙ্গে পরীমণির কী সম্পর্ক সেটাও জানার চেষ্টা করছে। এছাড়া তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কথিত প্রযোজক ও রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান চালানো হয়।

র‌্যাব সূত্র বলছে, বুধবার গ্রেফতার হওয়া মিশু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল পরীমণির। মিশু মূলত বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করে পরীমণিকে নিয়ে যেতো। এছাড়া রাজও প্রথমদিকে পরীমণিকে উচ্চবিত্ত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে বিশেষ উদ্দেশ্যে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সেসব ব্যক্তির সঙ্গে ‘বিশেষ সঙ্গ’ ও পার্টিতে অংশ নিয়ে অর্থ আয় করতেন পরী। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এরকম ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তির নামও প্রকাশ করেছেন।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরীমণিকে সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার একটি কক্ষে রাখা হয়। সেখানে তার সঙ্গে একাধিক নারী র‌্যাব সদস্যরা পাহারায় ছিলেন। সারারাত ঘুমাননি পরীমণি। রাতভর কান্নাকাটি করেছেন তিনি। 

এদিকে র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, পরীমণির সহযোগী নজরুল রাজের বাসা থেকে সিসা খাওয়ার উপকরণসহ বিকৃত যৌনাচারের বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও একটি মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা।

এর আগে বুধবার বিকালে হঠাৎ করেই পরীমণি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে ‘বাসায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা’ দরজা ধাক্কাধাক্কি করছেন বলে অভিযোগ করেন। পরে জানা যায়, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল তার বাসায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে গিয়েছেন। বিকাল পাঁচটা থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা নাটকীয় অভিযানের পর পরীমণির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, আইস ও এলএসডি মাদক উদ্ধারের দাবি করে র‌্যাব। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও কিছু জানানো হয়নি।

Bootstrap Image Preview