জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি গ্রেফতারের আগে গত ৪ আগস্ট ফেসবুক লাইভে আসেন। গ্রেফতারের আগমুহূর্তে তার লাইভে আসার ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে জনমনে। মুহূর্তে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন ভিডিওটিতে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চার কোটির বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পরীমনির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ঢুকে দেখা গেছে, শুধু নায়িকার পেজ থেকেই ভিডিওটির মোট ভিউ হয়েছে তিন কোটি ৯৬ লাখ। মন্তব্য পড়েছে সাত লাখ ৪৪ হাজারের বেশি।
শেয়ার করা হয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। সব মিলিয়ে রিঅ্যাকশন ছিল এক কোটি ৯০ লাখ। এটি শুধু পরীমনির ভ্যারিফায়েড পেজের হিসাব।
এর বাইরে ইউটিউব ও অন্যান্য মাধ্যমের শত চ্যানেল থেকে প্রচারিত হয়েছে ৩১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের এই লাইভের রেকর্ডেড ভার্সন। সেগুলোও বহুবার ভিউ হয়েছে। নির্দিষ্ট সংখ্যা বের করা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে ঢালিউড নায়িকার লাইভটি দেখা হয়েছে চার কোটির বেশিবার।
প্রসঙ্গত, বনানীর বাসায় ৪ আগস্ট বিকাল ৪টার কিছু পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান শুরুর আগমুহূর্তে ফেসবুক লাইভে আসেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। একই সময়ে একসঙ্গে দুই লাখের বেশি মানুষ দেখে এই লাইভ। যেটি বিস্ময়কর ও ওই দিনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। ইউটিউব, ফেসবুকে ঝড় তোলে এই ভিডিও। লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের বন্যা বইতে শুরু করে। টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদের পাশাপাশি টকশো হয় পরীমনি ইস্যুতে।
সাধারণত এত অল্প সময়ের মধ্যে কোনো ভিডিওর প্রতি মানুষের এত আগ্রহ দেখা যায়নি।
গত কয়েক মাস ধরেই আলোচিত পরীমনি। বিশেষ করে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ সামনে আনার পর থেকে। এরপর ঢাকার রেস্তোরাঁয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে গত দুই মাসে ফেসবুকে পরীমনির অনুসারী বেড়েছে ২০ লাখ। জুনে পরীমনির অনুসারী ছিল এক কোটি ১৭ লাখ, এখন তা বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ। দেশের বিনোদন অঙ্গনের আর কোনো তারকাশিল্পীর এত অনুসারী নেই।
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এ নায়িকা নানা কারণেই আলোচিত-সমালোচিত। ঈদুর আজহায় একাধিক পশু কুরবানি দিয়ে মাংস বিলিয়ে তার মানবিক দিক যেমন প্রশংসিত হয়, অন্যদিকে তার বেপরোয়া ও খামখেয়ালি জীবনযাপন তাকে বারবার সমালোচনায় বিদ্ধ করে।
প্রেম-ভালোবাসা-বিয়ের মতো ঘটনার কারণেও পরীমনি ছিলেন সবার কাছে আলোচনার বিষয়। তার একাধিক বিয়ে ও ব্যক্তিগত জীবন শুরু থেকে বহুল চর্চিত বিষয়।
সেদিন ফেসবুক লাইভে পরীমনি যা বলেছিলেন
৪ আগস্ট, র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পরীমনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। এ সময় র ্যা ব পরীমনিকে তার বাড়িতে অভিযানের কথা জানায়। কিন্তু তিনি লাইভে এসে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালাতে শুরু করেন।
“আমি ঘুমিয়ে ছিলাম,” পরীমনি লাইভে বললেন। তারা উপরের দিকে চলে আসছে বাড়ির নীচের প্রধান ফটকের সবকিছু ভাঙচুর করে, এখন তারা বাড়ির গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। বারবার কলিংবেল বাজাচ্ছে। পুলিশসহ কেউ শুনছে না, সবাইকে ডেকেছি, কেউ আসছে না।
মরে গেলে আসবেন, ভাই? তিনি বলেন, আমি মনে করি তারা ডাকাত। প্রত্যেক ব্যক্তির চেহারা আলাদা। ডাকাত হলে তারা কি করবে? আমি এটা ভয় পেয়েছিলাম। আমি আজ লাইভ কাটব না।
থানা থেকে এখানে আসতে কতক্ষণ লাগে? মানুষ কি মারা যাবে? কেউ জানে না যে তারা কোন থানা বা সিআইডি বা র্যাব থেকে আসছে।
পরীমনি সবাইকে আরও বলেন, আমি বুঝতে পারছি না আমি মরে গেলে আসবেন? আমার তো হার্ট অ্যাটাক হবে। আমি স্ট্রোক করে মারা যাব। এটা একটা অত্যাচার। লাইভ ফিচার করা এই অভিনেত্রী কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
তারপর তাকে বলতে শোনা গেল, আমি মরে যাব। পৃথিবী আর দেখবে না! আমি লাইভ কাটব না। আমি দেখিয়ে মরব. আমার সাথে কেউ কিছু করতে পারবে না। আর তাকে মেরে ফেললে হলে কিছুই করার নেই।
ভিডিও