Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, এপ্রিল ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

পরীমনিকে নিয়ে আদালতে যা যা হলো...

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২১, ০৫:০১ PM
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২১, ০৫:০১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

বনানী থানায় করা মামলায় দ্বিতীয় দফার রিমান্ড শেষে শুক্রবার জামিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে পরীমনির জামিন না দিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।

১৩ আগস্ট শুক্রবার দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়।

ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল পরীমনির জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে দ্বিতীয় দফার রিমান্ড শেষে পরীমনিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডির কর্মকর্তা।

এদিন পরীমনির পক্ষে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী, মজিবুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন।

তারা শুনানিতে বলেন, আসামির সামাজিক মান-মর্যাদা রক্ষা এবং একজন শিল্পী হিসেবে তার তাকে মানসিক উৎপীড়ন থেকে রক্ষার মানবিক তাগিদেই তাকে জামিনে মুক্ত করা মানবিক কারণেই আবশ্যক।

‘পরীমনির মুক্তির দাবিতে সমাজের মুক্ত চিন্তার প্রগতিশীলরা পর্ব সোচ্চার হচ্ছে। বিজ্ঞ আদালত, নিশ্চয়ই পত্র-পত্রিকা খুললে প্রতিদিন এসব সংবাদ ছাপা হচ্ছে, টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে। দেশের বিশিষ্ট জনেরা তার মুক্তি দাবি করছেন।’

শুনানিতে বলা হয়, ‘সে যদি এই মামলায় অপরাধী হয়, তাহলে তাকে মামলার বিচারের মধ্যে দিয়ে শাস্তি দেয়া যাবে। কিন্তু আপাতত যে কোনো শর্তে তার জামিন চাই বিজ্ঞ আদালত।’

আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ২০ বোতল মদ পাওয়া গেছে, মামলার বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন যে, মামলার বিষয়ে তদন্ত করে সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে। এটা একটি অনিশ্চিত বিষয়।

‘আমার মক্কেলের পাসপোর্ট রেখে জামিন দেয়া হোক। কারণ আইও বলেছেন, তার আবেদনে আসামি পালিয়ে যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘পরীমনি আদালতকে বলেছেন, আমার পাসপোর্ট জমা রাখলে আমি তো বিদেশে যেতে পারব না। বিশ্বময় অতিমারি সমস্যা চলছে, এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।

‘সরকার যেভাবে বলবেন সেভাবে তদন্ত করার কথা, সেটা হলো আর্মস গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।’

একই সঙ্গে পরীমনির বাসায় র‍্যাবের অভিযানকে আইনগত নয় বলে দাবি করেন ওই আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘র‍্যাব আইনগতভাবে অপারেশন করে নাই, তারা আসামিকে গ্রেপ্তার করে উত্তরাতে তাদের অফিসে নিয়ে গেছে। তাকে থানায় হস্তান্তর না করে নিজেদের কাছে কয়েক ঘণ্টা রাখার পর তাকে হস্তান্তর করা হয়।’

এ বিষয়ে পরীমনি আদালতকে বলেছেন, ‘আমি কোনো খুনের আসামি নই, আমাকে কেন এত ঘণ্টা আটক রাখা হলো, আপনি নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করবেন, অবজার্ভ করবেন, জামিন দেবেন।’

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, ‘আসামির বাসা থেকে প্রচুর দেশি-বিদেশি মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি নায়িকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দেশের অনেক শিল্পপতি কোটিপতি ও সম্ভ্রান্ত ঘরের লোকদের ও তরুণ সমাজকে ডিজে পার্টির মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাই মামলার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার কাছে এলএসডি পাওয়া গেছে, আর বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছানোর পর আধা ঘণ্টা পর দরজা খুলেছেন। সেই সময়ের মধ্যে তিনি মদগুলো ঢেলে ফেলেছেন।’

জামিন বিরোধীতার এমন সব কারণ দেখান রাষ্টপক্ষের আইনজীবী।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পরীমনির জামিন নাকচ করেন বিচারক।

গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীতে বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে র‌্যাব। পরের দিন ৫ আগস্ট পরীমনি-রাজসহ চারজনের ৪ দিন করে রিমান্ডে পাঠায় আদালত।

১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগীর দুই দিনের রিমান্ড আদেশ দেয় আদালত।

আটকের দিন বিকেল ৪টায় দিকে ফেসবুক লাইভে আসেন পরীমনি। লাইভে তিনি জানান, কে বা কারা তার বাসায় প্রবেশ করতে চাচ্ছেন। তিনি নিজে বনানী থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, তাদের কোনো দল তার বাসায় আসেনি। সাদা পোশাকে থাকা অপরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে নিজের প্রাণভয়ের শঙ্কার কথা জানান তিনি।

এরপর বিকেল ৪টার পর পরই বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মদ, মদের বোতলসহ অন্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।

সে ঘটনায় র‌্যাব পরীমনির নামে বনানী থানায় তিনটি মামলা করেন।

Bootstrap Image Preview