Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ সোমবার, মে ২০২৫ | ২১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শাকিবের অভিযোগ নিয়ে জায়েদ খানের মন্তব্য

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২১, ১১:৪২ AM
আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২১, ১১:৪২ AM

bdmorning Image Preview


ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরিমনি। গত ৭ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরীমণির সদস্যপদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। শুরুতে শিল্পীদের তেমন কাউকেই পরীর পক্ষে কথা বলতে দেখা যায়নি। কিন্তু এখন শোবিজের অনেকেই পরীর মুক্তির জন্য আওয়াজ তুলেছেন। নায়িকার পক্ষে মুখ খুলছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান।

এদিকে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার নায়িকা পরীমণিকে নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়ে চিত্রনায়ক শাকিব খানের সমালোচনা পর সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলছেন, বিষয়টি নিয়ে শিল্পী সমিতির আপাতত কোনও বক্তব্য নেই।

এরা আগে তিনি বলেন, ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে শিল্পী সমিতি তার পাশে থাকবে না। তিনি বলেন, শিল্পী সমিতি শিল্পীদের ভালো কাজে পাশে থাকবে, খারাপ কাজে নয়। আমি জায়েদ খানও যদি খারাপ কিছু করি তাহলে আমার দায়ভার কেন শিল্পী সমিতি নেবে?

৪ আগস্ট পরীমণিকে গ্রেপ্তারের পর ৭ অগাস্ট বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) সংবাদ সম্মেলন করে তার সদস্যপদ স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিল্পী সমিতি। শিল্পী সমিতির এই ভূমিকাকে ‘বিতর্কিত’ আখ্যায়িত করে শনিবার সোশাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেন সাবেক সভাপতি শাকিব খান।

শাকিব খানের অভিযোগের বিষয়ে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ওটা তিনি দিতেই পারেন। সে একজন পার্শ্ব শিল্পী। তার অভিমত সে ব্যক্ত করেছে, করুক। একটা নিয়ে কিছু বলার নেই।

শিল্পী সমিতির বিরুদ্ধে শাকিব খানের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আসলে পোস্টটি দেখিইনি। এখন কোনও বক্তব্য আমরা দেব না। ১৫ অগাস্টে আমাদের কার্যক্রম আছে। সেটা শেষ হলে দেখব, কী করা যায় ।

বিষয়টি নিয়ে তার (শাকিব খান) আরও আগেই বলা উচিত ছিল। ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী মারা গেলে লাভটা কী। মন্তব্য করেন জায়েদ।

'খেয়াল করছিলাম, অপেক্ষাও করছিলাম। প্রত্যাশা ছিল, বিপরীতে বেড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। গত কয়েকদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থেকে শুক্রবার আদালতের নির্দেশে পরীমণিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সহকর্মী হিসেবে যতদূর জানি পরীমণি বাবা-মা হীন। তার বেড়ে ওঠা পারিবারিকভাবে আর পাঁচটা তরুণ-তরুণীর বেড়ে ওঠা, স্ট্রাগলে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। হয়তো সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে পরীমণি অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

১০ আগস্ট আদালত চত্বরে পরীমণির শতবর্ষী নানা তার নাতনিকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন। করোনার এই ভয়াবহতাও আটকাতে পারেনি তার বৃদ্ধ নানাকে। রক্তকে উপেক্ষা করতে পারেনি রক্ত। কিন্তু সময় কি নিষ্ঠুর! পরীমণির সঙ্গে নাকি দেখাই হলো না বৃদ্ধ নানার। আদালত চত্বরেই পরীমণির নানাকে বলতে শুনেছি, “পরীমণি নিজের জন্য জীবনে কিছুই করেনি। সব মানুষের জন্য দান করে গেছে। আর এখন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।”

পরীমণির মামলা এখন বিচারাধীন। ওই বিষয়ে কিছু বলছি না। সে যে মামলায় গ্রেফতার হয়েছে, তার কী অপরাধ সেটা বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। দেশের প্রচলিত আইন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে সঠিক বিচার হবে। কিন্তু তার আগে পরীমণির জীবন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যেভাবে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, এটা সত্যি দুঃখজনক।

আরও দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে, গত কয়েকদিন ধরে খেয়াল করছি শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমণি গ্রেফতারের পর তার প্রতি কোনও ধরণের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, দুঃসময়ে শিল্পীর পাশে না থেকে উল্টো তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। মুহূর্তে পরীমণির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে! এ যেন কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে!

সমিতির এই আচরণ সত্যিই খুব রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে বিবেকবান অনেক সিনিয়র জুনিয়র শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের আক্ষেপ রয়েছে। শিল্পীর সাথে সংগঠনের এটি একটি অমানবিক আচরণ। প্রশ্ন থেকে যায়, এখনকার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাহলে কাদের স্বার্থে?

বিগত দিনেও একাধিক সিনিয়র শিল্পী এর চেয়েও ভয়ঙ্কর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার শিল্পী সমিতি অভিযুক্ত সদস্যের সদস্যপদ স্থগিত করেনি। বরং পাশে ছিল, রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু এখনকার শিল্পী সমিতির এসব আচরণ বিতর্কিত। আবারও বোঝা গেল, এই শিল্পী সমিতি সবাইকে এক করতে পারেনি, বরং বিচ্ছিন্ন করেছে। বিভেদ তৈরি করে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নষ্ট করেছে। হয়তো এজন্য চলচ্চিত্রের আজ এই দুর্দশা।

এমনিতেই নানা কারণে সিনেমা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তার মধ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সামনে আরও ঘোর বিপদ।

যারা পরীমণিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করা উচিত। পরীমণি ত্রিশটির বেশি সিনেমার সাথে জড়িত বলে জানতে পেরেছি। তার হাতে আছে আরও বেশ কিছু সিনেমা। কিন্তু যারা বছরের পর বছর একটি সিনেমাতেও কাজ না করে দিনের পর দিন শিল্পী সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে তাদেরও আয়ের উৎসও খুঁজে বের করা উচিত।

সহশিল্পী হিসেবে আশা রাখি, পরীমণির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমণি যখন ফিরবে তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।’

Bootstrap Image Preview