Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:১০ AM
আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:১০ AM

bdmorning Image Preview


চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এসময় মেয়েকে রক্ষায় মা এগিয়ে গেলে তাদের দুজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় হামলাকারীদের হাতে দুজনই গুরুতর আহত হন। শুধু তাই নয়, তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং মুঠোফোনও কেড়ে নেয় হামলাকারীরা। তবে ঘটনার পর পরই হটলাইন ৯৯৯-এ কল দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এদিকে ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনো ভয় আর আতঙ্কে আছেন মা-মেয়ে।

এক সময় স্বামীর সঙ্গে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় তিন মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন গৃহবধূ সুরাইয়া বেগম। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে ক্ষুদে ব্যবসায়ী স্বামী আবুল খায়ের হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এসময় গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম  বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পাস করা খাদিজা বেগম তার আরেক বোনকে নিয়ে টিউশনি করে সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তা আর হয়ে উঠেনি। পরে গোটা পরিবারটি ফিরে আসেন গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ষোলদানা গ্রামে। কিন্তু নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ শুরু হয় প্রতিপক্ষ ইব্রাহিম বেপারী এবং তাফাজ্জল বেপারীর সঙ্গে। এই নিয়ে গত ২৬ আগস্ট প্রথম দফায় মা-মেয়ের ওপর হামলা করে তারা। পরে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গত ৩১ আগস্ট চাঁদপুরের আদালতে মামলা করেন সুরাইয়া বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার ইব্রাহিম বেপারী ও তাফাজ্জল বেপারী সবুজ ও বশির নামে দুই যুবককে মা-মেয়ের ওপর লেলিয়ে দেয়। ঘটনা আঁচ করতে পেরে আত্মরক্ষায় তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় মায়ের কাছ থেকে সবুজ ও বশির মেয়ে খাদিজা বেগমকে ছিনিয়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। মেয়েকে রক্ষায় মা এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদের দুজনের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এসময় প্রথমে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করেন। তবে ঘটনার পর থেকেই হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। 

এমন পরিস্থিতিতে বুদ্ধি করে ঘটনার শিকার খাজিদা বেগম অন্য একজনের মুঠোফোন থেকে ৯৯৯-এ কল করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে আহতরা চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তারা ভয় এবং আতঙ্কে আছেন। এমন অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন মা মেয়ে এবং তাদের স্বজনরা। স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আবুল খায়ের এর পরিবার দীর্ঘদিন গ্রামের বাড়িতে না থাকায় তার ভিটেবাড়ি অন্যদের দখলে চলে যায়। পরে তার পরিবার বাড়িতে ফিরে আসলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে এসব নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। যার জের ধরে গত ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে, হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানিয়েছেন, কিছুটা সুস্থ হলেও আহতরা ভয় এবং আতঙ্কে আছেন। অন্যদিকে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ। প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview