গাজীপুরের শ্রীপুরে যৌতুকের দাবিতে গভীর রাতে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে ওয়াজ বাজিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক ইমামের বিরুদ্ধে।
শ্রীপুর থানায় বুধবার রাতে গৃহবধূ খুশি আকতারের বাবা হাসেন আলী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
খুশির বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বদলাগাড়ি গ্রামে। তিনি স্বামী মাওলানা শরিফ মাহমুদের সঙ্গে শ্রীপুরের নতুনবাজারের আনছার রোড এলাকার বয়রাসালায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শনিবার রাত ৩টার দিকে ওই বাসায় তাকে নির্যাতন করা হয়।
খুশির পরিবার জানায়, পারিবারিকভাবে ২০১৯ সালের জুনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় এলাকায় শরিফের সঙ্গে বিয়ে হয় খুশির। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুরে যান শরিফ। সেখানে স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন তিনি।
তাদের অভিযোগ, অর্থনৈতিক সংকট ও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে কিছু দিন ধরে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন শরিফ। গত শনিবার রাতে স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ওই সময় খুশিকে মারধর করেন শরিফ।
পরে রাত ৩টার দিকে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে ওয়াজ বাজিয়ে খুশির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন শরীফ। ওই সময় খুশির চিৎকারে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
গুরুতর আহত খুশি এখন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, আগুনে খুশির শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
খুশির বাবা হাসেন আলী বলেন, ‘টেকার জন্যে ছোলটাক (খুশি) আগুনত ফেলে মারবের চাছিল। বহুত টেকা দিছি এই দুই বছরে। তাও ছোলটেক মারডাং করতো সে (শরিফ)।’
খুশি আকতার বলেন, ‘অন্য মেয়েদের সাথে ইয়ে করত; কথা বলত। সেগুলো আমি সহ্য করতে পাই নাই। অনেক মারধর করছে ওই রাতে।
‘সেদিন খাটে শুইতেও দেয়নি। পরে মেঝেতে ঘুমাই। হুট করে ঘুম থেকে উঠে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে; আর ওয়াজ বাজছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’