কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত রবিবার দুপুরে প্রকাশ্যে কুপায় একদল যুবক। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ের সামনে ধারাল অস্ত্র নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা করে একদল যুবক। ফিল্মিস্টাইলে কালো রঙের মাইক্রো থেকে মুখোশপড়া এক যুবক রাম দা নিয়ে নাজমুলের বাম হাতে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারপর কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া যুবকরা তার দুই পায়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে বাজারের পাশের ধলাই নদীর বাধ দিয়ে হেঁটে চলে যায়।
ঘটনার সময় নিহতের পাশে এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুই মিনিটের মধ্যেই ব্যবসায়ী নেতা নাজমুলকে কুপিয়ে হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে গেলেও তাকে রক্ষায় বাজারের কেউ এগিয়ে আসেনি। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, নিহতের শরীরে ২২টি কাটা জখমের চিহ্ন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নাজমুলকে প্রথম আঘাতকারীর নাম রাসেল। সে স্থানীয় প্রতাপী গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদ ওরফে লাইছ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা খুনের ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিরোধের জের বলে জানালেও হামলার পর আহত নাজমুলকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাজমুল তার ফেসবুক আইডির লাইভে এসে হামলার নেপথ্যে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে তার প্রার্থী ঘোষণার কারণ বলে জানান। লাইভে হামলাকারীর নামও বলে যান নাজমুল।
এ ঘটনায় সোমবার ভোর রাতে হত্যা মিশনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ ১৫-২৫৪৪) সহ চালক কাজী আমির হোসেন হিরা (৪২)কে আটক করে পুলিশ। সে মৌলভীবাজার সদর থানার বাঘলিয়া গ্রামের কাজী মুসলিম উদ্দিনের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক চালক হিরা জানান, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া রাসেলের ভাই জুয়েল তার গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় সোমবার কমলগঞ্জ থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই সামছুল হক। মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার ভোর রাতে জেলার রাজনগর উপজেলা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জুয়েল মিয়াকে আটক করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। পুলিশ কিলারদের আটকে জোর অভিযান চালাচ্ছে বলে ওসি ইয়ারদৌস হাসান জানিয়েছেন।