নিজস্ব প্রতিবেদক- রাজধানীতে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় প্রত্যারণার জাল বিছিয়েছে একটি চক্র। উত্তরার গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আবু তালহা মাসুম ও মেডিকেল রিপ্রেজিস্টেটিভ শামীম আহমেদের নেতৃত্বে নি:সন্তান দম্পতিকে সন্তান লাভের আশ্বাস দেখিয়ে এই চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
শুধু লাইসেন্সের আবেদন করে চলছে অবৈধ কার্যক্রম। আর তালহা-শামীমের এই ভয়াবহ প্রতারণার জালে হাজারো বন্ধাত্ব দম্পতিকে খুইয়েছেন জীবনের শেষ সম্বল।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ধানমন্ডির বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মচারী ও ভ্রাম্যমান দালালদের সহযোগিতায় রোগীসংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকে চালানো হচ্ছে চটকদার বিজ্ঞাপন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দেখা গেছে, যে প্রতিষ্ঠানের নামে পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া হয়, সেটির অস্তিত্বই নেই। এ ছাড়া অবৈধভাবে ভারতীয় চিকিৎসকদের মাধ্যমে অনলাইনে রোগী দেখানো হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সাবেক রেজিস্ট্রার জাহিদুল হক বসুনিয়া বলেন, অনুমোদন না নিয়ে বিদেশি চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা অবৈধ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, হার্টবিট ফার্টিলিটি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শামীম আহম্মেদ। চিকিৎসা পেশায় কোনো অভিজ্ঞতা নেই তার। 'নোভা আইভিআই ঢাকা লিমিটেড' নামে অস্তিত্বহীন আরেকটি ডায়াগনস্টিকের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। এছাড়া শামীম চিকিৎসকদের স্বাক্ষর নকল করে রোগীদের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট দেন। এটি জানার পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শামীম ও তালহা নতুন করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিয়েছেন গাজী টাওয়ারে।
শামীম আহমেদের পার্টনার আবু তালহা মাসুম ত্বহা গার্মেন্টসের অন্যমত কর্ণধার।
সামীম জানিয়েছেন এই ব্যবসা লাভজনক বলে আবু তালহা মাসুম তাঁর নিজস্ব ৩৬০০ বর্গ ফ্ল্যাটি এই ব্যবসার জন্য দিয়েছেন। যার অবস্থান উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পাশে।
এছাড়াও এই উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ইন্টেরিয়র ডিজাইন করার জন্য নগদ ১ কোটি টাকা দিয়েছেন। তবে ত্বহা গার্মেন্টসের মালিক আবু আলহা মাসুম আরও একাধিক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কারণে সামীমকে উক্ত ব্যবসাটি সামীমের লাইসেন্সে পরিচালিত করতে বলেছেন।
তালহা মাসুম ও শামীমের ব্যবসায়িক পার্টনার ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন জানান, নি:সন্তান দম্পতিদের প্রতারণার জন্য, আমি ওই প্রতারক চক্র থেকে আলাদা হয়েছি।
এ বিষয়ে শামীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। এছাড়া তাঁর অন্য প্রতিষ্ঠানের সংগঠিত অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।