Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ সোমবার, মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধর্ষণ করেন মামুনুল হক: আদালতে ঝর্না

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০২:২৭ AM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০২:২৮ AM

bdmorning Image Preview


নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন মামলার বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্না। এ সময় ঝর্না বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মামুনুল হক আমাকে ধর্ষণ করেন।

সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় ৪২ জন সাক্ষীর মধ্যে বুধবার বাদীই প্রথম সাক্ষী দিয়েছেন।

বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে আসামি মামুনুল হকের উপস্থিতিতে সাক্ষী দেন ঝর্না। আদালত পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

এদিন দুপুর সোয়া ১২টা থেকে ঝর্ণা সাক্ষীর জবানবন্দি দেয়া শুরু করেন। দুপুর ২টায় জবানবন্দি ও জেরা শেষ হয়। এ সময় ঝর্না একবার হিজাব খুলে বিচারককে মুখ দেখিয়ে ফের হিজাব দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন।

জেরার সময় বাদীকে তার আইনজীবীরা সহযোগিতা করতে চাইলে মামুনুল হকের আইনজীবীরা বাগবিতণ্ডা ও হাসাহাসিতে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া আলোচিত এ মামলার সাক্ষী শুনতে আদালতে অনেক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সবার দৃষ্টি ছিল মামুনুল হক ও ঝর্ণার দিকে।

আপনাকে মামুনুল হক কিভাবে ঘটনার দিন আপনাকে নিয়ে যায়? আইনজীবীর এমন প্রশ্নের উত্তরে ঝর্ণা বলেন, রাজধানীর কলাবাগান এলাকা থেকে মামুনুল হক তার গাড়িতে উঠিয়ে বেড়ানোর কথা বলে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে নিয়ে আসে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মামুনুল হক ধর্ষণ করেন।

আদালতে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুজ্জামান রাকিব। সহযোগিতায় ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন, হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ কয়েকজন। আসামি পক্ষে ছিলেন- সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ্সহ কয়েকজন।

এর আগে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরা ঝর্নার করা ধর্ষণ মামলায় সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। 

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন মামলার বাদী ঝর্না সাক্ষী দিয়েছেন। দুপুর ২টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামুনুল হককে ফের কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিবুজ্জামান রকিব জানান, কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্না সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। সেই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষীকে উভয় পক্ষ জেরা করেছেন। আদালতের কাঠগড়ায় প্রথমে মামুনুল হক বার বার বাদীকে উদ্দেশ্য করে দিক নির্দেশনা মূলক কথা বলার চেষ্টা করেছেন। পরে অনুরোধ করার পর তিনি চুপ থাকেন।

মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তবে ঘেরাও থাকাবস্থায় এই হেফাজত নেতা জানান, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তিনি শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করার বিষয়টি মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রী জানতেন না।

এ ঘটনার পর সোনারগাঁ থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ঝর্না। মামলার এজাহারে ঝর্না অভিযোগ করেন, বিচ্ছেদের পর তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল তাকে ঢাকায় আসার জন্য ‘প্ররোচিত’ করেন। ঢাকায় আসার পর তার পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে মামুনুল নানাভাবে তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেন। এর ধারাবাহিকতায় মামুনুলের পরামর্শে কলাবাগানে এক বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন এবং বিয়ের আশ্বাস দিয়ে এবং অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেছেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে মামুনুল করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

Bootstrap Image Preview