Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ডা. মুরাদকে পদত্যাগ 'করিয়ে' মুখ খুললো সেই নাহিদ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:৫২ PM
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:৫২ PM

bdmorning Image Preview


নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে তীব্র সমালোচিত ডা. মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেয়ার পর আলোচিত টকশোটির সঞ্চালক নাহিদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগে দম্ভের প্রশ্রয় নেই।’

গত ১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে এক ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন মুরাদ। লাইভটির সঞ্চালক ছিলেন ইউটিউবার ও ফেসবুকার নাহিদ।

লাইভে বিএনপির রাজনীতি সমালোচনার একপর্যায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন মুরাদ হাসান। এ ছাড়া, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ও পরিবার নিয়েও কথা বলেন তিনি।

মুরাদ হাসানের আপত্তিকর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এর মধ্যে রোববার রাতে আবারও নাহিদের সঙ্গে লাইভ আলোচনায় আসেন মুরাদ। তার ওই লাইভেও ছিল বিতর্কিত অজস্র মন্তব্য। এছাড়া, তার ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ নিয়েও শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবারের মধ্যে মুরাদকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ার নির্দেশ দেন বলে সোমবার জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এর পরপরই ফেসবুকার ও ইউটিউবার নাহিদ তার ফেসবুক পেজ নাহিদরেইনসে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ, দাম্ভিকতা ও অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেয় না। আগামীকালের (মঙ্গলবার) মধ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’

স্ট্যাটাস দেয়ার পর লাইভেও আসেন নাহিদ। তিনি দাবি করেন, মুরাদের বক্তব্য আপত্তিকর মনে হলেও প্রতিমন্ত্রী হওয়ার কারণে তাকে থামাতে পারেননি।

নাহিদ বলেন, ‘আমার খুব বেশি যে কন্ট্রোল আছে তা না, হি ইজ আ মিনিস্টার, কাম-অন। আই অ্যাম জাস্ট গাই নেক্সট ডোর। আমি যত কথাই বলি না কেন, আমার কথায় খুব বেশি কিছু একটা হবে না। হি হ্যাজ টু কন্ট্রোল হিমসেলফ’

‘তাও বলব, আমার লাইভে যেহেতু হয়েছে অ্যান্ড আই ওয়াজ হোস্টিং ইট, আমারও কিছু দায় আছে উনাকে থামিয়ে দেয়ার। আমাদের দেশের একটা মন্ত্রীকে থামিয়ে দেয়ার প্র্যাকটিসটা আমরা এখনও করে উঠতে পারিনি। আই লার্নড মাই লেসন। আমি একটা জিনিস শিখেছি যে, আমার যখন থামানো উচিত মনে হবে, তাকে থামিয়ে দিতে হবে।’

মুরাদ যা বলেছেন তার প্রতি কোনো সমর্থন নেই বলেও জানান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘তিনি যা করেছেন এটা আমি মোটেও তা সাপোর্ট করি না। ডেফিনিটলি ইটস রিয়েলি ব্যাড। তিনি ক্ষমা চাইবেন এ ব্যাপারে। আমার রেসপনসিবিলিট হচ্ছে আমার শোতে হয়েছে। আই অ্যাম রিয়েলি স্যরি ফর দ্যাট।’

ঘটনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে নাহিদ বলেন, বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের কাছে, কিন্তু মুরাদ হাসান যে ভাষায় উত্তর দিয়েছেন, সেটা ছিল অপ্রত্যাশিত।

তিনি বলেন, ‘এ রকম একটা লাইভ শোতে আসলে, যখন এটি ভয়েস কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হয় তখন অপোজিট গেস্টকে কন্ট্রোল করা অনেক টাফ হয়। আমরা জানি যে, ডা. মুরাদ হাসান একটু হাইপার টাইপের মানুষ। উনি অনেক বেশি এক্সাইটেড থাকেন সবসময়। ইফ হি হ্যাজ আ মাইক, যখন তিনি একটা টকশোতে থাকেন তখন আরও বেশি হাইপার থাকেন।’

জাইমা রহমান ইস্যুতে রাখা বক্তব্য নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘উই ট্রাইড টু মেক হিম আন্ডারস্ট্যান্ড, মেক হিম কাম অ্যাবাউট হিজ স্টেটমেন্ট। এবং উনি আসলে কোন প্রশ্নের কী জবাব দেবেন সেটা সম্পূর্ণ উনার ব্যক্তিগত মতামত ছিল। যেখানে আমাদের বা আমার কোনো কন্ট্রোল ছিল না। আই অলওয়েজ ট্রাইড মাই বেস্ট। আমি উনাকে প্রশ্ন করেছি একটা, উনি জবাব দিছ্ছিলেন আরেকভাবে। হি ওয়াজ ইন হাইপার মুড।’

জাইমাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্যের কড়া সমালোচনাও করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘জাইমাকে নিয়ে অনেকগুলো কমেন্ট করেছেন মে বি ফিউ সেকেন্ডসের মধ্যে, যে কমেন্টগুলো হি ওয়াজ নট দ্যাট আই ওয়াজ সাপোর্টিং হিম, ইট ওয়াজ বিকজ সো আনএক্সপেক্টেড।’

মুরাদ যখন জাইমা রহমানকে নিয়ে কথা বলছিলেন তখন টকশো সঞ্চালক নাহিদকে হাসতে দেখা যায়। বিষয়টি অস্বীকার করেননি নাহিদ নিজেও। আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি দাবি করেন, সে সময় কী করা উচিত বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

তিনি বলেন, ‘আমি যে প্রশ্ন করেছিলাম, সেই প্রশ্নের উত্তরে খুবই আনএক্সপেক্টেড ছিল। আই ওয়াজ অ্যাকচুয়ালি বিগ সারপ্রাইজড। আই ডিডন্ট নো হোয়াট টু ডু। আই ওয়াজ অ্যাকচুয়েলি লাফিং।’

তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে মুরাদ হাসানের করা মন্তব্য সমর্থনযোগ্য নয় বলেও জানান নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘উনার স্টেটমেন্টগুলো অনেককেই হার্ট করেছে। যে কারণে আমি উনাকে আবারও দুদিন পরে লাইভে আসার জন্য রিকোয়েস্ট করেছিলাম। যাতে উনি স্যরি বলেন সবাইকে।’

আওয়ামী লীগের অনেক নেতাসহ আরও অনেকে রোববারে রাতের লাইভে আসার জন্য মুরাদ হাসানকে অনুরোধ করেন বলেও দাবি করেন নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে বুঝিয়ে রাজি করে বলেছিলাম যে, ইউ হ্যাভ টু সে স্যরি। আপনি যে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন সেই স্টেটমেন্টটা নট আপ টু দ্য স্ট্যান্ডার্ড। আপনার স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায় না। আওয়ামী লীগের স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায় না। ইউ হ্যাভ টু সে স্যরি।’

নাহিদ বলেন, ‘এটা শেইমিং হয়ে গেছে, ক্যারেক্টার শেইমিং হয়ে গেছে। এটা ডেফিনিটলি নট আ গুড থিং। বিশেষ করে আমাদের নারী সমাজের জন্য।’

রোববার রাতে লাইভের আসার পরে মুরাদ হাসান দুঃখপ্রকাশে আগ্রহী ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ। তবে লাইভ শুরুর পর সেটি আর ঘটেনি।

নাহিদ বলেন, ‘লাইভে আসার পরে, হি ওয়াজ সাপোসড টু সে স্যরি। আমি অনেকবার চেষ্টাও করেছি, উনি যেন স্যরিটা বলে অ্যাজ হি প্রমিজড, অ্যাজ হি সেইড। উনি স্যরি বলবেন সবাইকে টু কাম পিপল ইউ নো। বাট উনি ওইদিকে যাননি।

‘উনি ব্যাসিক্যালি উনার মতোই উত্তেজিত ছিলেন। যদিও উনি কিছু স্যরি বলার চেষ্টা করেছেন, বাট হি ওয়াজ নট রিয়েলি অ্যাপোলজিটিক। উনার হয়ে আমি নিজেই স্যরি বলেছিলাম। বিকজ দ্যাটস দ্য লিস্ট আই ক্যান ডু। আমি একজন মন্ত্রীকে ফোর্স করতে পারি না। উনি কী স্টেটমেন্ট দেবেন না দেবেন সেটা সম্পূর্ণ উনার ব্যক্তিগত মতামত।’

নাহিদ বলেন, ‘সেই লাইভেও অনেক কথাবার্তা চলে এসেছে। উনি স্যরি বলার ভাবটা আনার পরেও ইনফ্যাক্ট আরও অনেক কথাবার্তা চলে এসেছে, হুইচ আই রিয়েলি ডিডন্ট লাইক। যেগুলো ব্যাসিক্যালি নারীদের হার্ট করবে। নারী অধিকারকে হার্ট করবে। শেইমিং করবে। দ্যাটস হোয়াই আই ডিলিটেড দ্য লাইভ ইয়েস্টার ডে।’

Bootstrap Image Preview