Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১১ রবিবার, মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

তিন মাস পর যে ভাবে প্রকাশ হলো হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী ২০২২, ০৮:০৬ PM
আপডেট: ১২ জানুয়ারী ২০২২, ০৮:০৭ PM

bdmorning Image Preview


সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। অন্তত তিন মাস আগে ঢাকায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল কাহের শামীম। বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে তিনি এ কথা জানান।

সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল কাহের বলেন, ‘এটা তো অন্তত তিন মাস আগের কথা। উনি মারা গেছেন ঢাকায়। পারিবারিকভাবে এটা জানানো হয়নি।’

হারিছ চৌধুরীকে ঢাকাতেই দাফন করা হয় বলে জানান কাহের। তবে কোথায় দাফন করা হয় তা তিনি বলতে পারেননি।

দলীয় স্থানীয় সূত্র জানায়, হারিছ চৌধুরী লেবাস পাল্টে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মৃত্যুর সময় তার কন্যা লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছিলেন।

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি চুপ রয়েছে। সাধারণত দলের নেতাদের মৃত্যুতে শোক জানানো হলেও তার ঘটনায় এ ধরনের কোনও বিবৃতি বা বক্তব্য আসেনি। দলীয় সূত্রের দাবি, তার প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে বহু বছর ধরে নেতারা অন্ধকারে ছিলেন। যে কারণে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী তার ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ও দাফন প্রসঙ্গে কথা বলেন তার গ্রাম এলাকার চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল। সিলেট জেলার কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর গ্রামে হারিছ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি।

দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হোসেন কাজল বুধবার বেলা ৩টায় বলেন, ‘হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন ঢাকায়। মোহাম্মদপুর এলাকার আশেপাশে তার দাফন হয়েছে। মারা যাওয়ার পর বেনামে এনাউন্স হয়েছে ওই এলাকায়। উনি তো নাম পরিবর্তন কইরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিছিলেন।’

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর কীভাবে পান—এমন প্রশ্নের জবাবে আলী হোসেন কাজল বলেন, ‘উনি তো মারা গেছেন তিন মাস অইবো। মারা যাওয়ার দুই-তিন দিন পর এলাকার সবাই টের পাইছে। গ্রামে তার একজন ভাই আছে, গৃহস্থ কাজ করেন, কামাল উদ্দিন। আমরা তাদের পরিবারের আচরণ দেইখা পরে বুঝতে পারছি যে, এমন কিছু ঘটছে।’

যদিও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ও দাফন নিয়ে নানা ধরনের রহস্য ছড়িয়ে পড়েছে। সিলেট বিএনপির কেউ-কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, তার মৃত্যু ও দাফন হয়েছে লন্ডনে। যদিও এ ব্যাপারে স্বনামে কমেন্ট করতে চাননি কেউ। সিলেটের একজন কমিশনার ও বিএনপিনেতা কয়েস লোদী জানান, তিনি শুনেছেন লন্ডনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হারিছ চৌধুরী। যদিও বিএনপির কেন্দ্রীয় কোনও নেতা এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

হারিছ চৌধুরী দেশেই মারা গেছেন জানিয়ে দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হোসেন কাজল আলী হোসেন কাজল উল্লেখ করেন, ‘লন্ডনে যদি মারা গিয়া থাকেন, লন্ডনে কোথায় কবর, সেইটা তো দেখাইতো অইবো।’

২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলার অভিযুক্ত আসামি ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী নেতা সিলেটের হারিছ চৌধুরী। প্রায় ১৪ বছর ধরে তিনি বিদেশে গা ঢাকা দিয়ে আছেন বলে জানা যায়। শুধু তাই নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটেও অভিযুক্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে লাপাত্তা দেখানো হয়। 

Bootstrap Image Preview