Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে মানে না তারাই খলনায়ক: ইনু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২২, ০১:১৯ PM
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২, ০১:১৯ PM

bdmorning Image Preview


 বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা মানে না, যারা জাতির পিতা মানে না, তারাই খলনায়ক বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

 বুধবার দুপুরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইনু বলেন, ভালো চলচ্চিত্র ভালো দর্শক-ভালো সমাজ তৈরি করবে। যা হবে শান্তিপূর্ণ, তথ্য-প্রযুক্তি চালিত, লিঙ্গ সমতায় ভারসাম্যপূর্ণ, পরিবেশবান্ধন এবং সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত। কালের যাত্রায় বাংলাদেশ এখন ফেরতযাত্রার প্রেক্ষাপটে। ফেরতযাত্রা হলো, ৭৫ এর পরে যে অন্ধকারে দেশ ডুবে গিয়েছিল, সেই সাম্প্রদায়িক, সামরিক বিচারহীনতার শাসনের অতল গহ্বর থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে টেনে তোলার ফেরতযাত্রায় আমরা আছি। আমরা মোকাবিলা করছি জঙ্গি সমস্যা, বৈষম্য-দারিদ্র্য, দুর্নীতি-দলবাজি। হাঁটছি সুশাসনের পথে। এই পথে ঠিক এই মুহূর্তে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ মিলে সংস্কৃতিক সমৃদ্ধি আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এই নৈতিকতা বিনির্মাণে, আদর্শ তৈরিতে চলচ্চিত্রে এখন প্রয়োজন একজন নায়কের। যে নায়ক আদর্শবাদী হবে, নারী-শিশু-সমাজ-দেশের প্রতি তার থাকবে অবিচল আনুগত্য। সে খাপ খাওয়াবে, কারণ আমাদের খাপ খাওয়াতে হয়। কিন্তু খাপ খাওয়ানো যায় না ইবলিশ শয়তান ও অন্যায়ের সঙ্গে। আমাদের সেই নায়ক কিছু জিনিসের সঙ্গে খাপ খাওয়াবে না, খলনায়কের সঙ্গে খাপ খাওয়াবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা মানে না, যারা জাতির পিতা মানে না, যারা স্বীকার করে না ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা, যারা গণহত্যাকে মানে না, যারা অস্বীকার করে তারাই খলনায়ক।

তারা চায় না বাংলাদেশ নিজের পথে হাঁটুক। বাংলাদেশের পথে হাঁটতে হবে সবাইকে নিয়ে। আর একসঙ্গে চলার পথে খলচরিত্র পাকিস্তানপন্থীদের কোনো স্থান নেই। এদের সম্পূর্ণ পরাজিত-ধ্বংস করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এভাবেই চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাস্তবের মিল ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আরেক ধাপ উপরে তুলতে হবে। যেখানে শান্তি ও সমৃদ্ধি থাকবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতা, সামরিক স্বৈরতন্ত্র, পাকপন্থার জঞ্জাল থেকে বেরিয়ে আসছি কিন্তু এখনো নির্মূল হয়নি। তাই আমরা জঙ্গি সন্ত্রাস যুদ্ধের মধ্যেই আছি। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গি সন্ত্রাস ও মৌলবাদ দেশ-জাতি-ভাষা অস্বীকার করে। সাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে বিষ। এই বিষ নিয়ে গণতন্ত্র হয় না। জঙ্গি সন্ত্রাস কেউটে সাপ, যার শেষ রাখতে নেই। অপরদিকে মনুষ্য কীর্তি হচ্ছে সংস্কৃতি, সমাজের আয়না। এই আয়নায় দেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে এ দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন সমাজে বিশ্বাসী—বলেন তিনি।

ইনু আরও বলেন, ইংরেজরা-পাকিস্তানিরা সাম্প্রদায়িক অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দিয়েছিল যা কচুরিপানার মতো। কচুরিপানা পরিষ্কার করলে নিজ রূপে দেশ উদ্ভাসিত হবে। কচুরিপানার বাহনকে দমন করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতার কুয়াশাকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের সেই মনন তৈরি করতে হবে যারা ইংরেজি কায়দায় বাংলা বলবে না, বাংলাকে আরবিকরণ করবে না। স্বাভাবিক পোশাকেই সচ্ছন্দে থাকবেন। ঢং করতে গিয়ে সঙ সাজবেন না। আমাদের দাদি-নানিরা যে পোশাকে ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষায় সফল ছিলেন, সেই বেশ ত্যাগ করে আমাদের তরুণীরা আরোপিত কিছু পরে সঙ সাজবেন না, আমি তার পক্ষে নই। আমি আধুনিকতার পক্ষে। ফ্যাশনের পক্ষে। কিন্তু সঙ সাজার পক্ষে নই। বিদেশি সাজার চেষ্টা করে আমরা লোক হাসাবো না। বরং বাঙালির পরিচয়ে বিদেশিদের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।

বাঙ্গালিয়ানাকে যদি অনুসরণ করতে চান, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকান। তিনি উন্নয়ন ও শান্তির দূত। চিরায়ত বাঙ্গালিয়ানার প্রতীক। তার দিকে তাকালে দেখবেন, একজন বাঙালি কন্যা, বাঙালি জায়া, বাঙালি জননীর মহিয়সী রূপ। আক্ষরিক অর্থেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাঙ্গালিয়ানায় মোড়া, বাঙ্গালিয়ানার চিরন্তন প্রতীক। শেখ হাসিনার দিকে তাকান যার ভেতরে আমাদের পূর্ব প্রজন্মের বাঙালি নারী থেকে আধুনিক বাঙালি নারীর প্রতিচ্ছবি বহমান। এই বাঙ্গালিয়ানা ধারণের মধ্য দিয়েই সংস্কৃতি-মূল্যবোধের ঘাটতি পূরণ করে সুশাসন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, দেশ গড়ার কাজে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে আমাদের চলচ্চিত্র, বলেন তিনি।

Bootstrap Image Preview