টিপকাণ্ডে সারা দেশে উত্তেজনার রেশ এখনো কাটেনি। এরমধ্যেই টিপ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিলেটের এক পুলিশ কর্মকর্তা। ফেসবুক পোস্টে তিনি নারীর পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এবং টিপ ইস্যুতে প্রতিবাদকারী পুরুষদের নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেন।
এ ঘটনায় সিলেট জুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আপত্তিকর ওই পোস্ট দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন সিলেটের সুশীল সমাজ। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিজের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টটি ডিলিট করে দেন। যদিও তার আগেই ওই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সংশ্লিষ্ট ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম লিয়াকত আলী। তিনি সিলেট জেলা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফেসবুকে কী লিখেছেন পরিদর্শক লিয়াকত
‘প্রসঙ্গ : টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি। ফালতু ভাবনা : (18+) টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু আমি ভবিষ্যৎ ভাবনায় শংকিত। বিভিন্ন শহরে অনেক নারীরা যেসব খোলামেলা পোশাক পরে চলাফেরা করেন তার মধ্যে অনেকেরই ব্রায়ের ওপর দিকে প্রায় অর্ধেক আনকভার থাকে। পাতলা কাপড়ের কারণে বাকি অর্ধেকও দৃশ্যমান থাকে। এখন যদি কোনো পুরুষ এইভাবে ব্রা পরার কারণে কোনো নারীকে হয়রানি করে তবে কি তখনও আজকে কপালে টিপ লাগানো প্রতিবাদকারী পুরুষগণ একইভাবে ব্রা পড়ে প্রতিবাদ করবেন?’
পুলিশের একজন কর্মকর্তার এমন মন্তব্যে হতবাক সিলেটের সুশীল সমাজ। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘টিপ নিয়ে একজন পুলিশের আপত্তিকর মন্তব্যে যেখানে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সারা দেশ, সেখানে সিলেটের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহরে দায়িত্ব পালন করা একজন পুলিশ সদস্যের এমন মন্তব্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এমন চিন্তা-চেতনার লোক রাষ্ট্রের মূলনীতি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তাই পুলিশের মতো সংবেদনশীল বিভাগ থেকে লিয়াকত আলীর মতো ব্যক্তিদের অপসারণ করতে হবে।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি কথা বলেছি প্রতিবাদের ধরন নিয়ে। পুরুষ কপালে টিপ পরে প্রতিবাদ করবে কেন? মূলত এই বিষয়টিকে মানতে পারিনি বলেই এমন পোস্ট করেছি।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিসি মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং তা খতিয়ে দেখছি। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে তার এই পোস্ট যদি কাউকে অবমাননার হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।