ভারতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষকে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে তাদের কিডনি নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশে ফেরত পাঠায় তারা। কৌশলে রোগীর কাছ থেকে স্বেচ্ছায় কিডনি দান করার সম্মতি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে নেয় চক্রটি।
রবিবার সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের একজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩। চক্রটি চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে অবৈধভাবে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে।
সোমবার বিকালে র্যাব-৩-এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস এ তথ্য জানান।
বীনা রাণী বলেন, সাভারে অভিযান চালিয়ে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রয়কারী প্রতারক চক্রের সদস্য বিউটি বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে একটি মেডিকেল ডকুমেন্ট ফাইল ও একটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগী এক রোগী গত বছরের ১০ অক্টোবর শারীরিকভাবে অসুস্থতাবোধ করলে বিউটির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখন তিনি তাদেরকে বাসায় আসতে বলেন। পরের দিন স্বামী-স্ত্রী তার বাসায় গিয়ে দেখা করেন। আসামি তাদের সঙ্গে শারীরিক বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন বলে প্রলোভন দেখায়।
এছাড়া বিউটি বেগম ভারতে আসা-যাওয়া করে বলে তার পাসপোর্ট ও বিভিন্ন কাগজপত্র দেখান। এসময় বিভিন্ন লোকজনকে ভারতে নিয়ে কম খরচে চিকিৎসা করিয়ে সাহায্য করেছেন বলে জানান। পরে তারা চিকিৎসার জন্য স্বামী-স্ত্রীর পাসপোর্ট ও ভিসা করেন। যশোর বেনাপোল বর্ডার দিয়ে ভারত যান।
র্যাব কর্মকর্তা বীনা রাণী বলেন, চিকিৎসার জন্য স্বামী-স্ত্রী ভারত পৌঁছলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা পলাতক আসামি শহীদ ও শেখ ফরিদ তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রাখেন। কয়েকদিন পর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর কথা বলে ভর্তি করে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অপারেশন করতে হবে বলে তাকে জানানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, অপারেশন শেষে রোগীর জ্ঞান ফেরার পর তার পেটের বাম পাশে কাটা দেখে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, তিনি তার কিডনি স্বেচ্ছায় দান করেছেন। তখন তিনি আসামিদের কাছ থেকে তার কিডনি বিক্রি করার কথা জানতে চাইলে তারা তকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পলাতক আসামিরা পরস্পর সহযোগিতায় রোগীদের সুচিকিৎসা করানোর কথা বলে। পরে অপারেশনের নাম করে অনুমতি ছাড়া তার বাম পাশের কিডনি বিক্রি করে দেয়। ভুক্তভোগী দেশে ফিরে সুচিকিৎসা না পেয়ে অসহায়ত্ব জীবনযাপন করছেন।
সাভার আশুলিয়া থানায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।