দিনাজপুর শহরের গণেশতলা এলাকার লেগেসি নামের একটি রেস্তোরাঁর মালিক রাহমাতুর রাফসান অর্ণব। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই তিনি কোটিপতি। দামি গাড়িতে চড়েন তিনি। গত ৩০ মার্চ দিনাজপুরের পাহাড়পুর ষষ্ঠীতলা এলাকার একটি বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর বেরিয়ে আসে তাঁর প্রতারণার নানা কাহিনি। এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় ৩১ মার্চ অর্ণবকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েদের সঙ্গে কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের কাছ থেকে দামি গাড়ি, স্বর্ণালংকার, লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। দিনাজপুর থেকে ঢাকার ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়েরা তাঁর এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, অর্ণবের বিরুদ্ধে অন্তত ছয়টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকার এক শিল্পপতির মেয়ে দিনাজপুর সদর থানায় ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। আরো দুই তরুণী অভিযোগ করলেও এজাহার গ্রহণ করেনি সদর থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন, অর্ণবের বাবা জাহিদুল ইসলাম অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক। বাবার প্রভাব খাটিয়ে অপরাধ করেও রেহাই পেয়ে গেছেন তিনি। এখন ধরা পড়লেও পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা নিতে চাইছে না।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অর্ণবের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার হওয়া মামলায় তাঁকে আরো সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
ওসি বলেন, অর্ণবের বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে থানায় সুনির্দিষ্ট লিখিত কোনো অভিযোগ নেই।
অর্ণব সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কর্ণমূর্তি গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুর ষষ্ঠীতলা এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শহরের গণেশতলা এলাকার ‘লেগেসি রেস্টুরেন্ট’ নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। দামি গাড়িও আছে তাঁর।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৩০ মার্চ পাহাড়পুর ষষ্ঠীতলার বাসায় ভুক্তভোগী তরুণীর চিত্কার শুনে স্থানীয় লোকজন অর্ণবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় পরের দিন ৩১ মার্চ আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাঁকে দুই দিনের রিমান্ড নেয়।
গত মঙ্গলবার ঢাকার ধানমণ্ডির এক শিল্পপতির মেয়ে দিনাজপুরে গিয়ে অর্ণবের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। ওই তরুণী অভিযোগ করেন, পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন অর্ণব। বিয়ের কথা বলে অর্ণব তাঁর কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা, ৫০ ভরি সোনা ও দুটি প্রাইভেট কার হাতিয়ে নেন। অর্ণব তাঁর কাছ থেকে সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়েছেন বলে মামলায় দাবি করেন ওই তরুণী।