বিদ্যুৎ ব্যবহারে গ্রাহকদের সংযমী ও মিতব্যয়ী হতে পরামর্শ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে ভেরিফায়েড ফেসবুজ পেজে দেয়া এক পোস্টে এ পরামর্শ দেন তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোজা, গ্রীষ্ম এবং সেচ মৌসুম- সব মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা প্রচণ্ড বেশি। শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার পর সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগ সর্বাত্মক কাজ করছে। এক্ষেত্রে, সম্মানিত গ্রাহকবৃন্দ, সবার স্বার্থে বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনাদের সংযমী এবং মিতব্যয়ী আচরণ প্রত্যাশা করছি।
এদিকে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া বিবিয়ানার আরও একটি গ্যাসকূপ উৎপাদনে এসেছে। এতে করে আরও ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে। ফলে বন্ধ থাকা ৬টি কূপের মধ্যে এখন ৫টিই উৎপাদনে এলো। এদিকে এলএনজি ভর্তি কার্গো চলে এসেছে মহেশখালীতে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ সেখান থেকেও ৪৫০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন গ্যাস পাওয়া যাবে। আগামীকাল আরও একটি কার্গো আসার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। সেই হিসাবে আজ ও আগামীকালের মধ্যে গ্যাসের ভোগান্তি কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিবিয়ানার একটি কূপ থেকে গত রবিবার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালি উঠতে শুরু করে। এ কারণে বন্ধ করে দিতে হয় ছয়টি কূপের উৎপাদন। এতে রবিবার রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এরপর সোমবার একটি এবং মঙ্গলবার আরও তিনটি কূপ উৎপাদনে আসে। আজ আরও একটি কূপ উৎপাদনে এলো। বিবিয়ানায় মোট কূপের সংখ্যা ২২টি। এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিবিয়ানাতে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের ঘাটতি সৃষ্টি হলেও এলএনজি দিয়ে সেই ঘাটতি মেটানো সম্ভব ছিল। কিন্তু পেট্রোবাংলার হাতে সেই পরিমাণ সরবরাহ না থাকায় সংকট সমাধানে কিছুই করা সম্ভব হয়নি। কেবল ভোগান্তিই বেড়েছে।
গ্যাসের এই সংকট শুধু আবাসিকে হচ্ছে না, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গিয়ে গত দুই দিন গ্যাস পায়নি সিএনজিচালিত গাড়ির ড্রাইভাররাও। একই অবস্থা ছিল শিল্পেরও। ছোট শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন প্রায় বন্ধ ছিল। বড়গুলো উৎপাদন অব্যাহত রাখলেও বিকল্প উপায়ে চালাতে হয়েছে।
শেভরনের এক কর্মকর্তা জানান, শেভরন বাংলাদেশ বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে তাদের সম্পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করেছে। ছয়টি ক্ষতিগ্রস্ত কূপের মধ্যে পাঁচটি থেকে এখন গ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে। গত ৩ এপ্রিল এই কূপগুলো বন্ধ হওয়ার পর এখন একে একে আবার তা চালু করা হচ্ছে। যে কূপটি দিয়ে বালু উঠছিল সেটি এখনও বন্ধ আছে। কেন বালি উঠছিল তা তদন্ত করা হচ্ছে।
মহেশখালীতে পৌঁছেছে এলএনজি কার্গো
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জানান, আজ সকাল ৭টা নাগাদ মহেশখালীতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেটের টার্মিনালে এসে পৌঁছেছে একটি এলএনজি কার্গো। রাত ৯টা নাগাদ সেখানে থেকে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন গ্যাস গ্রিডে যুক্ত হবে। এছাড়া আরও একটি কার্গোর আগামীকাল সামিটের টার্মিনালে আসার কথা রয়েছে। সেটি এলে আগামীকাল রাত ৯টা নাগাদ আরও বেশি গ্যাস গ্রিডে যুক্ত হবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে মাত্র ৪১৫ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন করার বিষয়ে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহম্মদ সাইফুল্লাহ কবির বলেন, ‘সকালে কার্গো এলেও এখন গ্যাস আনলড করা যাচ্ছে না, সাগরের ঢেউয়ের কারণে। এই কাজগুলো সাধারণত করা হয় জোয়ার ভাটার হিসাব করে। রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে গ্যাস রিগ্যাসিফিকেশন করে গ্রিডে দেওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।’