অনলাইনে মানুষকে কম দামে চকচকে ভালো মানের পণ্যের আকর্ষণীয় পণ্যের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসা একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। চক্রের সদস্যরা ফেসবুকে পেজ খুলে চকচকে নতুন শাড়ি-থ্রি পিসের বিজ্ঞাপন দিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে ছেঁড়া ও পুরোনো কাপড় ডেলিভারি দিত। এসএ পরিবহনের বুকিংম্যান ও লেবারদের মাধ্যমে প্রতিটি বুকিংয়ে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বুকিং করত বলে জানিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃতরা। তাদের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিবি লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অনলাইনে প্রতারণা চক্রের দলনেতাসহ পাঁচজনকে রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকার পশ্চিম ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. বাপ্পি হাসান (২৪), মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল (১৯), মো. সোহাগ হোসেন (২২), মো. বিপ্লব শেখ (২৫) ও নুর মোহাম্মদ (২৮)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যবহার অযোগ্য ও অতি নিম্নমানের পুরোনো ও ছেঁড়া শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রি পিসসহ বিভিন্ন পণ্য-সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
রাজীব আল মাসুদ বলেন, হাজারীবাগ থানার পশ্চিম ধানমন্ডির একটি বাড়িতে বসে এই অনলাইন প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রতারণার কাজ করত। তারা ফেসবুকে পেজ খুলে ভালো মানের পণ্যের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিত। বিজ্ঞাপন দেখে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ডার আসলে চক্রটি অর্ডার পাওয়ার পর মানুষকে নিম্নমানের, ব্যবহারের অযোগ্য ও নষ্ট মালামাল কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিত।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একটি পেজ কিছুদিন ব্যবহার করার পর বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে আবার নতুন পেজ খুলে একইভাবে প্রতারণা করে।
এই চক্রের সঙ্গে এস এ পরিবহন নামের একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কিছু অসাধু কর্মচারীরও যোগসাজশ রয়েছে বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এস এ পরিবহনের মাধ্যমে চক্রটি অধিকাংশ পণ্য পাঠাত। ক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত প্রতারণার অভিযোগ আসতে থাকায় কুরিয়ারের কিছু কর্মচারী বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাদেরকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে পরবর্তীতে প্রতারণার কাজ চালিয়ে যায় চক্রটি। ইতোমধ্যেই এস এ পরিবহনের ওই কর্মচারীদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।