Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শারীরিক সম্পর্কের পর সব হারিয়েও ব্ল্যাকমেলের শিকার, অবশেষে...

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ মে ২০২২, ০২:৩৫ PM
আপডেট: ০১ মে ২০২২, ০২:৩৫ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বগুড়ার শেরপুরে ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে এক মাদরাসাছাত্রী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। ওই ছাত্রীর নাম মোসা. আদুরী খাতুন (১৪)। সে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি গ্রামের আবু হানিফের মেয়ে।

আদুরী স্থানীয় খামারকান্দি বালিকা দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণিতে পড়ত।

অভিযোগে জানা যায়, একই ইউনিয়ন ও গ্রামের বাসিন্দা এন্তাজ আলীর ছেলে আবু মুছা (২০)। পেশায় একজন চা বিক্রেতা হলেও ভিডিও এডিটিংয়ে বেশ দক্ষ ছিল সে। মুছা মাল্টিমিডিয়া নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) একটি আইডি আছে তার। আর সেই আইডি ব্যবহার করে ওই মাদরাসাছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে এবং একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করে মুছা। পরে বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে এসব থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় মুছাকে। এরপরও বিয়ের জন্য আদুরীকে গোপনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে সে। কিন্তু আদুরীর পরিবার রাজি না থাকায় তাকে ভিন্নপথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেয় মুছা।

আদুরীর পরিবারের দাবি, আদুরীকে ওই কীটনাশক সংগ্রহ করে দিয়েছিল মুছা।

পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে নিজ শয়নকক্ষে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে দ্রুত স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যায় আদুরী।

নিহত আদুরীর মামা আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করছিল মুছা। প্রতিবাদ করায় তার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমনকি মাদরাসার অনুষ্ঠানের আদুরীর একটি ছবি সংগ্রহ করে সে। পরবর্তীতে সেটি এডিটিং করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে আদুরীকে দেখানো হয়। সেই সঙ্গে ওই বখাটের সঙ্গে সম্পর্ক না গড়লে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। পাশাপাশি আত্মহত্যা করতে আদুরীকে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন আব্দুর রহিম।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া উক্ত ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে শজিমেক হাসপাতাল মর্গে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কমকর্তা।

এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে আবু মুছার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Bootstrap Image Preview