সাভারের আশুলিয়ায় কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে বিক্রির অভিযোগে রাজীব (২২) নামের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিল্লাল (২৫) নামে আরও এক সহযোগী পলাতক রয়েছেন।
রবিবার রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার নারসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আল্লাহর দান- ৫ নামক দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত রাজীব বরিশাল জেলার মুলাদি থানার নুনচর গ্রামের চুন্নু হাওলাদারের ছেলে। আশুলিয়ার বিভিন্ন বাজারে তাদের আল্লাহর দান- নামে ৭টি বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। এ ছাড়া পলাতক বিল্লাল হোসেন একই এলাকার আবুল কালাম হাওলাদারের ছেলে। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভুক্তভোগী এক ক্রেতার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সন্ধ্যায় কয়েকজন সাংবাদিক ওই দোকানে যান। সেখানে কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয় কি না জানতে চান তারা। এ সময় আটক রাজীবের চাচাতো ভাই বিল্লাল মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন।
বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে কৌশলে সটকে পড়েন বিল্লাল। পরবর্তীতে রাত ১২টার দিকে ওই দোকানের মালিক রাজীবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আল্লাহর দান নামক ওই দোকানের বিরিয়ানি খেয়ে আলমগীর হোসেন নামের এক ক্রেতার সন্দেহ করেন। এ সময় কিসের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয়েছে তা জানতে চাইলে ব্যবসায়ী রাজীব ও দোকানের কর্মচারীরা ওই ক্রেতাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন বলেন, বিরিয়ানি খাওয়ার শুরুতেই আমার সন্দেহ হয়। পরে তাদের কিসের মাংস জিজ্ঞেস করলে গরু বলে জানিয়ে রাগারাগি করেন। তাদের মনোভাব দেখে বিরিয়ানি না খেয়ে ১৮০ টাকা দিয়ে চলে যাই।
পুলিশের ভয়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী সায়েদ হোসেন বিল্লাল বলেন, কিছু মানুষ চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসিয়েছে। আমাদের আশুলিয়ায় ৭টি শাখা। শাখা-৫ দোকানটি এক বছর হলো। এখানে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। কাঠগড়া বাজারের আলিম কসাইয়ের কাছ থেকে আমরা গরুর মাংস কিনি। মাংস ল্যাবে পরীক্ষা করে যদি অন্য কিছু পাওয়া যায় আপনারা যে শাস্তি দেবেন, আমরা তাই মাথা পেতে নিব।
কাঠগড়া বাজারে আলিম কসাই বলেন, প্রায় বছর ১২ বছর ধরে তাদের কাছে মাংস বিক্রি করি। শুক্রবার (১৩ মে) দেশি ছোট গরুর জবাই করেছিলাম। সেই মাংস নিয়েছে তারা। সেখানে হাড় চিকন হতে পারে। গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বাজার কমিটি প্রতিদিন যাচাই-বাছাই করে এখানে। অন্যকিছু করার কোনো সুযোগ নেই।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। আলামত হিসেবে মাংস জব্দ করে পরীক্ষা উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। কোনো অভিযোগকারী না থাকায় আমি বাদী হয়ে মামলা দিয়ে আটক রাজীবকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি।
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, আশুলিয়া থানার একজন কর্মকর্তা মাংস পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো আলামত হাতে পাইনি। আমাদের এখানে সম্ভব না হলে প্রয়োজনে ঢাকায় ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠাবো।