নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মাসুদ রানা নিজ স্কুলের এক ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলের সামনে শিক্ষক মাসুদ রানাকে বহিষ্কারসহ শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের দাবির মুখে ঐ শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করেছে স্কুল কমিটি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বজেন্দ্রনাথ জানান, এ বিষয়ে তারা স্কুলে জরুরি বৈঠকে বসেছেন। অডিও ফাঁসের ঘটনা তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঐ শিক্ষককে পুরোপুরি বহিষ্কার করা হবে।
জানা গেছে, বুধবার বিকেলে ফেসবুকে অডিওটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে কুতুবপুরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ফাঁস হওয়া ৬ মিনিটের বেশি সময়ের অডিওতে শিক্ষক মাসুদ রানার এক ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতে শোনা যায়। অডিওতে তিনি ঐ ছাত্রীকে বলেন- ভিডিও কল দিলে একটু খুলে দেখাইও। ভুক্তভোগী ছাত্রী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলেও তিনি বারবার একই প্রসঙ্গ টেনে আনছিলেন।
এর আগেও শিক্ষক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগ এনেছে শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী জানান, ক্লাসে-কোচিংয়ে ও মোবাইলে অনেককেই কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি স্কুল কমিটিকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় মাসুদ রানা দীর্ঘদিন তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এদিকে, অডিও ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগেন স্কুল কমিটির মেম্বার রেজাউল করিমসহ অন্যরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার ছাত্রছাত্রীরা এক হয়ে শিক্ষক মাসুদ রানার শাস্তি, স্কুলের শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনা, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ নানা দাবি তুললে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ফলে তড়িঘড়ি করে মাসুদ রানাকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্কুল কমিটি।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, পাগলা স্কুলকে কিছু লোক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, দুর্নীতি-অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতায় স্কুল এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। কমিটির মেম্বার রেজাউল করিম ও কয়েকজন শিক্ষক সিন্ডিকেট করে স্কুলকে লুটেপুটে খাচ্ছেন। কিছুদিন পর পরই তারা একেকটি অপকর্ম করে ধরা পড়েন। প্রতিবাদ করলেই ছাত্র-ছাত্রীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
অডিও ফাঁসের সত্যতা স্বীকার করে শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, আমি ভুল করে ফেলেছি। খুব চাপে আছি।