মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও টিকটক বানানো থামছে না। অ্যাম্বুলেন্স কিংবা প্রাইভেটকার ভাড়া করে ঠিকই সেতুর মাঝখানে গিয়ে টিকটক তৈরিতে ব্যস্ত একদল তরুণ।
সেতুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা থাকলেও তারমধ্যেই তারা ঠিকটক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। টিকটক ভিডিও বানানোর দায়ে ফখরুল আলম নামে ওই তরুণকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ জরিমানা অনাদায়ে তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সাজাপ্রাপ্ত ওই তরুণ তার অপরাধ স্বীকার করে জরিমানার টাকা পরিশোধও করেন।
এদিকে স্বপ্ন সংযোগ খুলে দেয়ার দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৭ জুন) বেশ স্বাচ্ছন্দে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার সেই রূপ আর নেই। দু’পাড়ের টোল প্লাজায় কোনো যানজট না থাকায় চোখের পলকেই নির্বিঘ্নে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রী ও চালক। সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকায় ফিরেছে শৃঙ্খলা। ফেরিতে পদ্মা পার হতে হয়েছে বাইকারদের।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সৌন্দর্যের প্রতীক প্রমত্তা পদ্মার বুকে কংক্রিটের গর্বের সেতুটিতে ভোর থেকে টোল প্লাজায় কোনো যানজট না থাকায় স্বাচ্ছন্দে টোলপ্লাজায় গিয়ে টাকা পরিশোধ করেন গাড়ির চালকরা। প্রশস্ত জায়গা আর একাধিক টোল বুথ থাকায় সেতুর দু’পাড় জাজিরা আর মাওয়ায় ছিল না কোনো ভোগান্তি। গড়ে প্রতিটি বুথে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড সময় লাগছে টোল পরিশোধ করতে। তাই আগের ভোগান্তির স্থানে জায়গা করে নিয়েছে স্বস্তি। সাশ্রয় হচ্ছে যাতায়াতের সময়ও।
টোল পরিশোধ করেই উত্তাল পদ্মার বুক চিরে সেতু দিয়ে বাহন ছুটে চলছে নির্ধারিত গন্তব্যে। দূরপাল্লার যান কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি সবাই ব্যস্ত বহুদিনের লালিত স্বপ্ন নিজ চোখে পরখ করে নিতে।
এদিকে, সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করায় পার হতে পারেনি কোনো বাইকার। ভোরেও অনেকে উৎসাহ নিয়ে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পারাপার হতে আসেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে যান তারা। টোল প্লাজার আগেই মোটরসাইকেল আটকে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
সেতু পার হতে না পেরে মোটর বাইকাররা সড়কে কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
মুন্সীগঞ্জ পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি আলমগীর হোসাইন বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মোটরবাইক সেতুতে ওঠা বন্ধ থাকবে।
মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় অনেকে পিকআপে বাইক তুলে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করলে তাতেও ব্যর্থ হন। কোনো উপায় না পেয়ে বেশিরভাগ বাইক ফেরিতে পারাপার হয়। উৎসুক মোটরসাইকেল চালকদের ভিড় এড়াতে এমন সিদ্ধান্তে ভোগান্তিতে পড়েন অনেক কর্মজীবী মানুষও।
তবে, বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও টিকটক বানানো থামছে না। অ্যাম্বুলেন্স কিংবা প্রাইভেটকারে করে ঠিকই সেতুর মাঝখানে গিয়ে টিকটক তৈরিতে ব্যস্ত একদল তরুণ।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল কবীর সময় সংবাদকে জানিয়েছেন, সেতুর সার্বিক নিরাপত্তায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান চলমান থাকবে। এ সময় আরও পাঁচটি গাড়িকে সতর্ক করা হয়েছে।
এছাড়াও পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল জোরদার করা হয়েছে, পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালতও।