Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

সেই শিক্ষকের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন মামুন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২২, ০২:১৬ PM
আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২২, ০২:১৬ PM

bdmorning Image Preview


নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষক খায়রুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী মামুনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন পুলিশকে শিক্ষক খায়রুনের মৃত্যুর কারণ জানিয়েছেন।

রবিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ ও পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটক মামুন পুলিশকে জানায়, ভোর ৪টার দিকে তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ফিরে এসে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় খায়রুনকে ঝুলতে দেখেন। দ্রুত তাকে নামাতে ওড়না কাটার জন্য তাৎক্ষণিক ছুরি বা বটি না পেয়ে পকেটে থাকা লাইটার দিয়ে ওড়নার মাঝখানে পুড়িয়ে মরদেহ নিচে নামান।

মামুন পুলিশকে আরও জানান, তার স্ত্রী সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহার বেতন পেতেন ৩৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন জায়গায় ঋণ পরিশোধ করে হাতে থাকত মাত্র আট হাজার টাকা। গতকাল খাইরুন নাহারের আগের সংসারের ছেলে এসে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যান। বাকি তিন হাজার টাকার মধ্যে বাড়িতে ছিল মাত্র এক হাজার টাকা। এসব নিয়ে খাইরুন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।

এদিকে প্রতিবেশী ও শিক্ষিকার আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ দাবি করছেন- এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। শনিবার রাতে মামুন কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে জানিয়েছেন বাসার পাহারাদার মো. নিজামুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘শনিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় ঢোকেন মামুন। আবার রাত আড়াইটার দিকে বের হন। কেন বের হচ্ছেন- জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছি। পরে সকাল ৬টার দিকে মামুন আবার ফেরেন।’

নিজামুদ্দিন বলেন, ‘বাসায় ফেরার পর মামুন আমাকে ডাকেন। আমি চার তলায় গিয়ে দেখি, খাইরুন নাহারের লাশ ঘরের মেঝেতে।’

এদিকে শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের হোসেন বলেন, ‘সকালে একটা ফোন আসে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। খবর শুনেই গুরুদাসপুর থেকে নাটোরে আসি। এসে দেখি, বোনের মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ। মনে হচ্ছে, ঘটনাটি আত্নহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

নাটোর শহরের বালারীপাড়া এলাকার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘এই দম্পতির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এই সমালোচনার কারণেই খাইরুন নাহার আত্নহত্যা করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে।’

সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী মামুন হোসেন একই  উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামেরর মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এর আগে এক ছেলের জননী খায়রুন নাহারের ডিভোর্স হয়েছিল আগের স্বামীর সঙ্গে। পরে ছয় মাসের প্রেমের পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়। এরপর আজ ভোরে ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

 

 

 

Bootstrap Image Preview