শোক দিবসে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে কর্মীদের পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় জেলা পুলিশের আরও ৫ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি জানান, বরগুনা সদর থানার এএসআই মো. সাগর, পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল মো. রবিউল ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল কেএম সানিকে প্রত্যাহার করে ভোলা জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর ডিবি পুলিশের এএসআই মো. ইসমাইল এবং ডিবি পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিনকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি হাচান। একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া দেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমানের (প্রশাসন ও অর্থ)।
এর আগে দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে প্রথমে বরিশাল রেঞ্চে এবং পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।
বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটায় পুলিশ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।
বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল, গাড়ি ভাঙচুরকারীকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছি, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন সেখানে। তিনি অনেক ভুল করেছেন।
‘যেখানে আমি উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেননি।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম এহসান উল্লাহ জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি তদন্তে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে সোমবার রাতে কমিটি গঠন করা হয়।