রাজধানীর দক্ষিণখানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত সানজানা মোসাদ্দিকার (২১) আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে ময়মনসিংহের গফরগাঁও হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সানজানার আত্মহত্যার পর তার মা একটি মামলা করেন। সেখানে সানজানার বাবা সানজানাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছেন এমন অভিযোগ ছিল। এরপর থেকেই আমরা তাকে খুঁজছিলাম, কিন্তু তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান। আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে যাই। বুধবার দুপুরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
ছাদ থেকে পড়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্রী সানজানা মোসাদ্দিকার মৃত্যুর পরই জানা গিয়েছিল বাবার হাতে তার নিয়মিত নির্যাতিত হওয়ার কথা। এই তরুণীর এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে এবার জানা গেল আরেকটি ঘটনা। মাসখানেক আগে সানজানা তার প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করার পর তারা গিয়ে দেখতে পান, তার গলায় বঁটি ধরে আছেন বাবা।
ওই তরুণী জানান, নিয়মিত মারধরের চাপ নিতে পারেননি সানজানা। তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার মা।
গত ২৭ আগস্ট দুপুরে দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকার একটি ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন সানজানা মোসাদ্দেক। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই সানজানার মা বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা শাহীন আলমকে আসামি করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন শনিবার দুপুরের দিকে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে ছাদের চাবি নেন সানজানা। পরে ওই ছাত্রী ১০তলা ভবনের ছাদে ওঠে সেখান থেকে লাফিয়ে পড়েন।
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লেখে গেছেন ওই ছাত্রী। চিরকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’