Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ১১ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘বুয়া-দাড়োয়ানকে দিয়ে সিগারেট আনায়, অশালীন কাপড়ে মুরব্বিদের সামনে যায় মিলা’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৪ PM আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সাবেক স্বামী বৈমানিক পারভেজ সানজারি, তার পরিবার এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ন্যায় বিচারের দাবিতে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন পপশিল্পী মিলা। এতে অভিনেত্রী নওশীনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।

মিলার দাবি, সানজারির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক আছে নওশীনের। যদিও এই অভিযোগ নাকচ করেছেন নওশীন। তার দাবি, মিলার আনা অভিযোগগুলো মিথ্যে।

অন্যদিকে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে আনা মিলার অভিযোগের কোনো পাল্টা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এতদিন। তবে এবার মুখ খুলেছেন সানজারি। আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

বিডিমর্নিং- পাঠকদের জন্য তা হুবহু ‍তুলে ধরা হলো-

‘নিরব থাকব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। দেড় বছর ধরে নিরবই ছিলাম। এই নিরবতা একজন প্রাক্তন স্ত্রী ও তার পরিবারের প্রতি আমার শ্রদ্ধা প্রদর্শন। কিন্তু এই নিরবতা যখন দুর্বলতা হিসেবে গণ্য হতে থাকে, তখন চুপ থাকাটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমি কখনই চাইনি পারিবারিক বিষয়গুলো এভাবে প্রকাশ হোক। আমার পরিবার, আমার শিক্ষা, পেশা, জ্ঞান ও মূল্যবোধ কখনই আমাকে সেটা শেখায়নি। কিন্তু মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্য ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার এবং গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে আমার ও আমার পরিবারকে নিয়ে যখন বানোয়াট বক্তব্য তুলে ধরা হয় তখন মুখ বুজে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অপ্রিয় সত্যগুলো অনিচ্ছা সত্ত্বেও এভাবে প্রকাশের জন্য আমি শুরুতেই ক্ষমা প্রার্থী।

আমাদের বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ১২ মে। সঙ্গীত তারকা মিলার সাথে আমার পরিচয় তারও আগে। কিন্তু বিয়ের পরই তিনি পারিবারিক জীবন সম্পর্কে তার নিজস্ব অস্বাভাবিক ধারণাগুলো আমার ও আমার পরিবারের উপর চাপিয়ে দিতে থাকেন। একটি যৌথ পরিবারে কখনই ঘরের বউ-এর তার কাজের বুয়া-দাড়োয়ানকে দিয়ে সিগারেট আনানো, অশালীন কাপড়ে মুরব্বি-মেহমানদের সামনে যাওয়া, তুচ্ছ কথায় বাড়িতে ভাঙচুর করা ও প্রতিবেশীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলা, মেনে নেওয়া যায় না। তার প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল আমার চিরায়ত মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।

পরিস্থিতি এক পর্যায়ে সীমা অতিক্রম করে ফেলে। আমার তাকে বুঝানোর সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আমি ধারণা করেছিলাম সে নিজেকে শুধরে নেবে। কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও তার আক্রমণের নিশানায় পরিণত হন। বাসাবাড়িতে অশান্তি দেখা দেয়। সব কিছু মিলিয়ে পরিবেশ যখন সহ্যের বাইরে চলে যায়, তখন উভয় পরিবারের কাছে আমি বিচ্ছেদের কথা জানাই। কিন্তু বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের পরই পরিস্থিতি আর সংকটময় হয়ে পড়ে। তার দায়েরকৃত সম্পূর্ণ সাজানো ও বানোয়াট নারী নির্যাতন ও দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবির মামলায় আমাকে আসামি হতে হয়।

তিনি আমাকে আমার কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করান। যিনি (মিলা) আমাকে কারাগারে পাঠালেন, তিনিই আবার সাক্ষাতে গিয়ে শর্ত দিলেন যে জন্মদাতা পিতা-মাতাকে ত্যাগ করলেই জেল থেকে আমাকে মুক্তি দেবেন। আমার পক্ষে এমন প্রস্তাব মানা সম্ভব ছিল না। আসলে আমার পক্ষে মিলার সাথে দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখার আর কোনো উপায় ছিল না। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ২২ মে ২০১৮ ইং তারিখে আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হয়। গত ১ বছর ধরে আইনগতভাবে তার সাথে আমার কোনোরুপ সম্পর্ক নেই। তিনি আমার স্ত্রী নন।

আইনি প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে আমি জামিনে মুক্ত হই। তার দায়েরকৃত বানোয়াট এই মামলায় আদালত চার্জ গঠনের পর থেকে গত দেড় বছরে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় মামলার বিচারিক পর্যায়ে আজ আবধি পরপর ৬টি শুনানির একটিতেও তিনি সাক্ষী দিতে আসেননি। বিজ্ঞ আদালত সমন-জারি করা সত্ত্বেও। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি একের পর এক আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েই চলেছেন। অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো তিনি জনসমক্ষে এনে আমাকে হেয়-প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেই যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে চলেছেন। তিনি নিজেই তার বক্তব্যে স্বীকার করেছেন যে, তিনি আমাকে ছাড়বেন না এবং ভক্তদের নিয়ে আমাকে রাস্তায় নামিয়ে জুতাপেটা করবেন। আমার জেল-জরিমানাও দাবি করছেন। অথচ আমি এই পর্যন্ত তার প্রতি কোনোরুপ সম্মানহানিকর বক্তব্য কোথাও একবারও উচ্চারণ করিনি। এতকিছুর পরেও তিনি হাস্যকরভাবে আমার সাথে সংসার করতে চাইছেন, আমাকে নিজের স্বামীও দাবি করছেন। এই স্ববিরোধীতাপূর্ণ বক্তব্যের বিচারভার আমি আপনাদের কাছে দিলাম।

তার বক্তব্যে এটা সুস্পষ্ট যে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে আমাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করাটাই তার এখন মূল লক্ষ্য। কিছু কল্পনাপ্রসূত বানোয়াট উপাত্ত দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনটিই সত্যি নয়। অথচ লাগামহীনভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে, আইনের বিচারেই তা সঠিক কিনা প্রমাণ হবে। আপনারা সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া রাখবেন।’

Bootstrap Image Preview